আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক :: রোহিঙ্গাদের মতো আরাকান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধেও সামরিক অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে এ তথ্য ফাঁস করেন।
এদিকে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমার টালবাহানা করছে বলে আবারও সমালোচনা করলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। অন্যদিকে, রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ খুঁজতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার সংগঠন আসিয়ান।
২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা-নির্যাতন, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকেই দায়ী করলেও তা অস্বীকার করে এসেছেন তিনি।
এবার খোদ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানালেন, রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের মতো করেই রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে ব্যক্তিগতভাবে নির্দেশ দিয়েছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চি। রোহিঙ্গাদের মতো বিদ্রোহীদেরও শাস্তি পাওয়া উচিৎ বলেও সু চি মন্তব্য করেন বলে জানান সামরিক এই কর্মকর্তা।
মিয়ানমার মিলিটারি ইনফরমেশন কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান জেনারেল তুন তুন নি বলেন, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি নির্দেশ দিয়েছিলেন। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে যেভাবে অভিযান চালানো হয়েছিল বিদ্রোহী বৌদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধেও একই রকম অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। যাতে করে আন্তর্জাতিক মহল আমাদের পূর্বের অভিযানের বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।
রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারার জন্য মিয়ানমার ও দেশটির নেত্রীকেই দায়ী করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে দেশটির আন্তরিকতার অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ অবস্থায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান আন্তোনিও গুতেরেস।
এদিকে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা আসিয়ান। শুক্রবার সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত দু’দিনব্যাপী সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।
থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডন প্রামুদ্বিনাই বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এটি করতে পারলে তবেই সব আমরা সব পরিষ্কার বুঝতে পারবো। সেক্ষেত্রে মিয়ানমার ও রাখাইনের সমস্যা সমাধানে আসিয়ানের নেয়া পদক্ষেপগুলো দৃশ্যমান হবে বলে মনে করি আমি।
রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে আসিয়ানের দেশগুলো সচেতন রয়েছে উল্লেখ করে এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পাঠকের মতামত: